আখলাকের প্রকার

অষ্টম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা - আখলাক | NCTB BOOK
2.7k
Summary

আখলাকের বিভাগ ও গুরুত্ব

  1. আখলাকে হামিদাহ: এটি মানব জীবনের উত্তম গুণাবলির সমন্বয়, যেমন ধৈর্য, সততা, দেশপ্রেম, এবং সমাজসেবা। এই গুণাবলির অধিকারী ব্যক্তিকে সমাজে সম্মান ও প্রশংসা পাওয়া যায়।
  2. আখলাকে যামিমাহ: এটি মানব জীবনের নিকৃষ্ট চরিত্র, যেমন অহংকার, ঘৃণা, এবং মিথ্যাচার। এই চরিত্রের অধিকারী ব্যক্তি সমাজে ঘৃণিত হয়ে থাকে।

আখলাকের গুরুত্ব

ইসলামের দৃষ্টিতে, আখলাক সবচেয়ে মূল্যবান। উত্তম চরিত্র জাতির শক্তি। মহানবি হযরত মুহাম্মদ (স.) বলেন যে, উত্তম চরিত্রের জন্যই তিনি প্রেরিত হয়েছেন। উত্তম চরিত্র ব্যক্তি ও সমাজকে উন্নত করে এবং চরিত্রহীন ব্যক্তিরা নিন্দিত হয়।

কিয়ামতের দিনে চরিত্রের গুরুত্ব

কিয়ামতের দিনে উত্তম চরিত্রের ওজন হবে সবচেয়ে ভারী। মহানবি (স.) বলেছেন, উত্তম চরিত্র পাপকে বাদ দিয়ে দেয় এবং আখিরাতে মর্যাদা বৃদ্ধি করে।

উত্তম চরিত্র অর্জনের আহ্বান

আমাদের উচিত উত্তম চরিত্র অর্জন করা এবং নিন্দনীয় স্বভাব পরিহার করা। এর ফলে আমরা দুনিয়ায় সকলের কাছে প্রিয় হব এবং পরকালে মর্যাদা লাভ করব।

কর্মসূচি

শিক্ষার্থীরা আখলাকে হামিদাহ-এর সুফলগুলোর একটি তালিকা তৈরি করবে।

আখলাক দুই ভাগে বিভক্ত।

১. আখলাকে হামিদাহ্
মানবজীবনের উত্তম গুণাবলিকে আখলাকে হামিদাহ বা প্রশংসনীয় চরিত্র বলে । যেমন- ধৈর্য, সততা, দেশপ্রেম, সমাজসেবা প্রভৃতি। এ সকল চরিত্রের অধিকারী ব্যক্তি সমাজে নন্দিত ও সম্মানিত।

২. আখলাকে যামিমাহ্ (25)
মানবজীবনের নিকৃষ্ট চরিত্রকে আখলাকে যামিমাহ বা নিন্দনীয় চরিত্র বলে। যেমন- অহংকার, ঘৃণা, মিথ্যাচার, সুদ, ঘুষ, অশ্লীলতা প্রভৃতি। এ সকল চরিত্রের অধিকারী ব্যক্তি সমাজে ঘৃণিত ও নিন্দিত।

আখলাকের গুরুত্ব
ইসলামের দৃষ্টিতে আখলাকের গুরুত্ব সর্বাধিক । আখলাকই উন্নত জাতির জীবনীশক্তি। যে জাতির চরিত্র যত ভালো থাকে, সে জাতি তত শক্তিশালী । যে জাতির চরিত্র ঠিক নেই, সে জাতি পৃথিবীতে টিকে থাকতে পারে না। সকল নবিই নিজ নিজ জাতিকে উত্তম চরিত্রের শিক্ষা দিয়েছেন। আর উন্নত চরিত্রকে পূর্ণতা দানের জন্য শেষ নবি হযরত মুহাম্মদ (স.)-কে আল্লাহ তায়ালা পাঠিয়েছেন। মহানবি (স.) বলেন,

অর্থ : “উত্তম চরিত্রের পরিপূর্ণতা দানের জন্যই আমি প্রেরিত হয়েছি।” (বায়হাকি)

উত্তম চরিত্র ব্যক্তিকে সুন্দর ও উন্নত করে । আর সমাজের সকল মানুষ চরিত্রবান ব্যক্তিকে ভালোবাসে ও শ্রদ্ধা করে। অপরদিকে চরিত্রহীন ব্যক্তি সকলের নিকট ঘৃণিত ও নিন্দিত। যার চরিত্র যত উন্নত ধর্মের দিক থেকেও সে তত অগ্রসর।

নবি করিম (স.) বলেন- 

অর্থ : “উত্তম চরিত্রই হলো সকল নেক কাজের মূল কথা।” (মুসলিম)

চরিত্র মানুষের ভূষণ । চরিত্রবলেই মানুষ সর্বত্র সমাদৃত হয় । ভালো চরিত্রের অধিকারী ব্যক্তি অধিকতর ইমানদার হয় । মহানবি (স.) বলেন –

অর্থ : “চরিত্রের বিচারে যে লোক উত্তম, মুমিনদের মধ্যে সেই পূর্ণতম ইমানের অধিকারী।” (আবু দাউদ ও দারিমি)

কিয়ামতের দিন পরিমাপদণ্ডে উত্তম চরিত্রের ওজন হবে অত্যন্ত ভারী।

নবি করিম (স.) বলেন, “মুমিনের পরিমাপদণ্ডে কিয়ামতের দিন উত্তম চরিত্র অপেক্ষা ভারী জিনিস আর কিছুই নেই ।” (তিরমিযি)

উত্তম চরিত্র মানুষের পাপকে খণ্ডন করে দেয়। নবি করিম (স.) বলেন, “উত্তম চরিত্র পাপকে এমনভাবে বিগলিত করে যেমনভাবে সূর্যতাপ বরফকে বিগলিত করে।” (তাবারানি, বায়হাকি)

উত্তম চরিত্রের অধিকারী ব্যক্তি আখিরাতে তার উত্তম চরিত্রের বিনিময়ে অত্যধিক মর্যাদা লাভ করবে। মহানবি (স.) বলেন, “বান্দা তার উত্তম চরিত্রের বলে আখিরাতে বিশেষ মর্যাদা ও সম্মানিত স্থানে উন্নীত হবে, যদিও সে ইবাদতের দিক থেকে দুর্বল থাকে।” (তাবারানি)

আমরা উত্তম চরিত্র অর্জন করব। নিন্দনীয় স্বভাব পরিহার করব। আমরা দুনিয়াতে সকলের কাছে প্রিয় হব। পরকালে অশেষ মর্যাদা লাভ করব।

কাজ : শিক্ষার্থীরা কয়েকটি দলে ভাগ হয়ে আখলাকে হামিদাহ-এর (সদাচরণের) সুফলগুলোর একটি তালিকা তৈরি করবে।
Content added || updated By
Promotion
NEW SATT AI এখন আপনাকে সাহায্য করতে পারে।

Are you sure to start over?

Loading...